রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি নিয়ে উভয় সংকটে ইউরোপ

রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তার মুখে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ঐক্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু অর্থনৈতিক স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রে মস্কোর দাবি মেনে নেবার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।

রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করতে পারে, এমন আশঙ্কা একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল না। ইউক্রেনে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমাতে জোরালো তৎপরতা শুরু করেছে, যদিও সেই প্রক্রিয়া যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এর মধ্যে রাশিয়াও হঠাৎ চলমান চুক্তির পরোয়া না করে একমাত্র রুবলের বিনিময়ে গ্যাস বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া সেই নতুন শর্ত মানছে না, এমন কারণ দেখিয়ে রাশিয়ার গাজপ্রম সংস্থা এই দুই দেশে গ্যাস সরবরাহ রাতারাতি বন্ধ করে দিয়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশেরও একই দশা হতে পারে, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। রাশিয়া ‘বৈরি’ দেশগুলোর উদ্দেশ্যে এমন হুমকিও দিয়েছে।। 

পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার আওতায় বিদেশে রাশিয়ার মুদ্রা সম্পদ মস্কোর নাগালের বাইরে চলে যাওয়া বাধ্য হয়ে রুবলে লেনদেনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দাবি করেছেন।

পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া রাশিয়ার গ্যাস থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও আপাতত জার্মানির মতো কিছু দেশ অন্যান্য পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের আশা করতে পারে। 

উল্লেখ্য, রাশিয়া এখনো ইউরোপে প্রায় ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করে। তার বিনিময়ে দিনে ৪০ কোটি ইউরো হাতে পায় মস্কো। বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বেচ্ছায় সেই আয় বন্ধ করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা বিশ্বের চলমান নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আরো ক্ষতি মেনে নিতে প্রস্তুত কিনা, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঐক্যবদ্ধভাবে জ্বালানি সংকট মোকাবিলার উদ্যোগ নিচ্ছে। আগামী সোমবার (২ মে) ইইউ জ্বালানি মন্ত্রীরা এক জরুরি বৈঠকে বসছেন। ইউরোপীয় কমিশন মস্কোর বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেলের অভিযোগ করেছে। তবে এমন সংকটের মুখে ইইউ কতটা অসহায় অবস্থায় পড়েছে, তাও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

ইইউ জ্বালানির দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনর কাডরি সিমসন বলেছেন, তিনি ইউরোপের গ্যাস আমদানিকারী কোম্পানিগুলোকে চুক্তির শর্ত মেনে রাশিয়াকে গ্যাসের দাম মেটানোর পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থাৎ রুবলের বদলে ইউরো বা ডলারেই লেনদেন করতে হবে। নিষেধাজ্ঞার শর্তও অমান্য করলে চলবে না। 

তবে কঠিন পরিস্থিতিতে ঘুরপথে রুবলে দাম মেটানোর পথও খোলা রাখা হচ্ছে। ব্লুমবার্গ সংস্থার সূত্র অনুযায়ী ১০টি ইউরোপীয় কোম্পানি ইতোমধ্যেই মস্কোর দাবি মেনে গাজপ্রম ব্যাংকে রুবল অ্যাকাউন্ট খুলেছে। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //